চটজলদি ওজন ঝরাতে অনেকেই ভাত বা রুটির বদলে ওটস খান। কাঁচা ওটস পুষ্টির ভাণ্ডার।
এক কাপ বা ৮১ গ্রাম কাঁচা ওটস-এ ক্যালোরির পরিমাণ ৩০৭। কার্বোহাইড্রেট থাকে ৫৫ গ্রাম, ফাইবার ৮ গ্রাম, প্রোটিন ১১ গ্রাম, ফ্যাট ৫ গ্রাম। এছাড়াও থাকে ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম ও জিংক। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীরা কি ওটস খেতে পারেন?
শরীর অন্যান্য রিফাইন্ড দানাশস্যের তুলনায় ওটস (কম প্রক্রিয়াজাত) বেশি সময় নিয়ে হজম করে। কাজেই খাওয়ার পর-পর-ই ব্লাড সুগার বেড়ে যায় না। ওটস-এ ফাইবারমাঝারি থেকে বেশি পরিমাণে থাকে, গ্লাইসেমিক ইনডেক্স-ও কম। তাই ব্লাড সুগারের রোগীরা ওটস খেতে পারেন, কিন্তু মাথায় রাখতে হবে কিছু বিষয়।
ডায়াবেটিস রোগীরা যদি ইনস্ট্যান্ট ওটস খান, যাতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে এবং একবারে খুব বেশি ওটস খান, তাহলে কিন্তু হীতে বিপরীত হবে।
আপনি যদি ডায়াবেটিক হন এবং গ্যাস্ট্রোপরেসিস-এ আক্রান্ত হন, তাহলে ওটস খাবেন না। কারণ, ওটস-এ ফাইবার থাকে যা তাড়াতাড়ি পেট ফাঁকা হতে দেয় না।
ডায়াবেটিস রোগীরা ওটস-এর সঙ্গে খান স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যেমন ডিম, দই, আখরোট, আলমন্ড। এতে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ডায়াবেটিস রোগীরা ওটস-এর সঙ্গে খেতে পারেন দারচিনি। খেতে পারেন জাম জাতীয় ফল। এই ফলে থাকে ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা প্রাকৃতিকভাবে ওটস-এ মিষ্টি স্বাদ দেয়, অথচ সুগার-ও বাড়ায় না।
ওটস কীভাবে খাবেন? রান্না করা না কাঁচা? গবেষকরা বলছেন, ওটস নির্ভয়ে কাঁচা খেতে পারেন, এতে স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হয় না। কাঁচা ওটসে থাকা বিটা গ্লুকান নামক দ্রবণীয় ফাইবার রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিস কমায়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রোজ ৩ গ্রাম বিটা গ্লুকান খেলে কোলেস্টেরল কমতে পারে ৫-১০ শতাংশ।
কাঁচা ওটস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে। তবে কাঁচা ওটসে ফাইটিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকে। এই অ্যাসিড শরীরে বিভিন্ন রকম খনিজ শোষণে বাধা দেয়। তবে ওটস রান্না না করে, সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে দিলে ওটসের মধ্যে থাকা স্টার্চ জাতীয় পদার্থ ভেঙে যায় এবং প্রাকৃতিক ফাইটিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে। ফলে শরীরে ওটসের পুষ্টিগুণ বেশি পরিমাণে শোষিত হয়। রান্না করা ওটসের তুলনায় জলে ভিজিয়ে রেখে ওটস খেলে তা হজম করতে বেশি সুবিধা হয়।